আমাদের দোয়া কেনো কবুল হয় না?

 


[১]

অস্থির চিত্তে আমরা অনেকেই প্রশ্ন তুলি। আল্লাহ তায়ালার কাছে এত এত দুআ করলাম, তবু দুআ কেন কবুল হয় না? 


আমি বলবো- আপনি দুআর মর্ম বুঝেন নি অথবা আপনার দুআ যথার্থ হয় নি। 


দুআ মানে শুধু— আল্লাহর কাছে চাইলাম আর সাথে সাথে পেয়ে গেলাম তেমনটা মোটেও নয়। দুআ মানে প্রার্থনা করা, আবেদন জানানো। আপনি দুআ করছেন মানে মহান আল্লাহর কাছে আপনার সংকট, দূরাবস্থা দূরীকরণের জন্য আবেদন জানাচ্ছেন। আপনার আবেদন আসমানের মালিক কবুল করলেও তার প্রতিফলন তৎক্ষনাৎ পেয়ে যাবেন এমনটা ভাবছেন কেন? 


আপনি আল্লাহ তায়ালার কাছে দুআ করেছেন এবং আরও করুন, করতে থাকুন —আপনার দুআ কবুল হয়ে গেছে, নিশ্চিন্ত থাকুন। কেননা আল্লাহ তায়ালা বলেছেন— ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।' [১] 


আমাদের প্রধান সমস্যা হলো— আমরা অতি তাড়াহুড়োপ্রবণ। নগদে বিশ্বাসী। বাকির প্রতি আস্থা নেই আমাদের। আচ্ছা, দুনিয়ার মানুষের প্রতি না হয় আস্থা নাই রাখলেন, সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার প্রতি তো রাখতে পারেন? 


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা তো কখনও বলেন নি— আমি তোমাকে দেবো না। শুধু বলেছেন —ধৈর্য ধারণ করো। আমার কাছে চাও। বারবার চাও। বরং না চাইলেই আমি গোস্বা হই। আমার কাছে ধনভাণ্ডারের কোনো অভাব নেই। তুমি শুধু লেগে থাকো সত্যের ওপর। অবিচল থাকো ঈমানের ওপর। 


তাড়াহুড়োপ্রবণদের দুআ আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন না। রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, বান্দার দুআ ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয় না, যতক্ষণ না বান্দা কোনো পাপ ছেড়ে দেওয়া নিয়ে দুআ করে, যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দা ফলাফল প্রাপ্তিতে তাড়াহুড়া না করে। 


জিজ্ঞেস করা হলো : ইয়া রাসুলুল্লাহ! তাড়াহুড়া বলতে কী বুঝাচ্ছেন? 


তিনি বললেন : বলে যে, আমি দুআ করেছি, আমি দুআ করেছি; কিন্তু আমার দুআ কবুল হতে দেখিনি। তখন সে ব্যক্তি উদ্যম হারিয়ে ফেলে এবং দুআ ছেড়ে দেয়। ' [২]


প্রত্যেক মুমিন বান্দার দুআ কবুল হয়। যদি আমাদের দুআ শতভাগ ত্রুটিমুক্ত হয়। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘বান্দার দুআ সর্বদা গৃহীত হয় যদি না সে অন্যায় কাজ অথবা আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদ করার জন্য দুআ করে এবং দুআয় তাড়াহুড়া করে।’ [৩]


এজন্য অযথা হাহুতাশ না করে নিশ্চিন্ত থাকুন। ধৈর্য ধারণ করুন। আল্লাহ রব্বুল আলামীন মুমিনের হাত ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন, কিভাবে তিনি আপনার দুআ কবুল না করে পারবেন? 


আপনি কি ভেবেছেন— হজরত আইয়ুব (আঃ) যখন প্রথম রুগ্ন হয়ে পড়েন, তিনি আল্লাহর কাছে দুআ করেন নি? তাঁর দেহ মুবারক যখন পোকামাকড় খুঁটে খুঁটে খেতে আরম্ভ করে, তিনি আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন নি? তবুও দীর্ঘ সতেরো বছর তাকে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হলো কেন? 


হজরত ইউসুফ (আঃ) কে যখন তার ভাইয়েরা কূপে নিক্ষেপ করছিলো, তিনি কোনোও দুআ করেন নি আল্লাহর কাছে? প্রার্থনা করেন নি— হে আল্লাহ! এই মুসীবত থেকে আমাকে উদ্ধার করো? তবুও গহীন কূপে নিক্ষিপ্ত হতে হলো কেন তাকে? 


আল্লাহ রব্বুল ইজ্জত কি তাদের দুআ কবুল করেন নি? অবশ্যই করেছেন। তবে দুআ কবুলের প্রতিফলন তাৎক্ষণিক ঘটে নি। তাঁরা তাড়াহুড়ো করেন নি। মেনে নিয়েছেন সাদরে মহান আল্লাহর সিদ্ধান্ত। অবশেষে বিজয়ী হয়েছেন মহান আল্লাহ তায়ালার পরীক্ষায়। আইয়ুব (আঃ) ফিরে পেয়েছেন তাঁর সুস্থ সবল দেহসৌষ্ঠব, শান্ত সবুজ পৃথিবী। ইউসুফ (আঃ) সমাসীন হয়েছেন মিশরীয় মন্ত্রণালয়ে। সান্নিধ্য পেয়েছেন পুনরায় ভাই বিনিয়ামিন ও বাবা ইয়াকুব (আঃ) এর।


আমাদের বােঝার চেষ্টা করতে হবে, শৃঙ্খলা হলাে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার একটা পদ্ধতি। তিনি ‘কুন’ বললেই সবকিছু সৃষ্টি হয়ে যায়, তবুও তিনি পৃথিবী এবং আসমান-জমিন সৃষ্টি করতে সর্বমোট আট দিন সময় নিয়েছেন। মাতৃগর্ভে তিনি আমাদের দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে বড় করে তােলেন। এটি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার নিয়ম। কিন্তু আমরা অনেকেই এই নিয়মের তােয়াক্কা করি না মােটেও। আমরা চাই, আমাদের দুআগুলাে খুব দ্রুত কবুল হােক। আমাদের এ-ই মজ্জাগত স্বভাবটায় পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। 


[২] 


আমাদের আরেকটি অন্যতম সমস্যা হলো —আমাদের আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার প্রতি ইয়াকীন দূর্বল। 

আল্লাহর ওপর আমাদের তাওয়াককুল তথা ভরসা কম। আমরা বিশ্বাসই করতে চাই না আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা অসম্ভবকেও সম্ভব করার ক্ষমতা রাখেন। যদ্দরুন আমরা দুআ করতে চাই না। করলেও পুরোটা জুড়ে থাকে অমনোযোগ আর আস্থাহীনতা। তো যেই রবের ওপর আমি আমার হাজত পূরণের ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতাবান হিসেবে আস্থা রাখতে পারছি না —সেই রব আমার দুআ কিভাবে কবুল করবেন? 


হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ইরশাদ করেন, ‘আমার বান্দা আমার প্রতি যেমন ধারণা করে আমি তাঁর সাথে তেমন আচরণ করি।’ [৪]


আল্লাহ তায়ালার প্রতি আমাদের ধারণা যদি হয়— এত্তো বড়ো দুর্যোগ থেকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা সহজেই আমাদের পরিত্রাণ দিতে পারবেন না। তবে আমরা পরিত্রাণও পাবো না। যদি আমাদের বিশ্বাস হয় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার প্রতি আস্থাশীলতায় টইটম্বুর, তিনি সর্বদা সবকিছু করতে সক্ষম, যেকোনো কিছু মুহূর্তেই তিনি অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে নিয়ে আসার শক্তি রাখেন —তবে আমরা ফলাফলও পাবো সেই অনুপাতে। আমাদের দুআগুলোও কবুল হবে সেই অনুসারে। আমাদের যত দুর্যোগ, দূর্বিপাক, মুসীবত সব দূরীভূত হবে অতি সহজে। 


একদিন হযরত ওমর ফারুক (রাঃ)  মদীনার কোন

এক গলিপথ দিয়ে হেঁটে চলছিলেন। হঠাৎ একটি যুবকের প্রতি তাঁর দৃষ্টি পড়ে গেল। সে তার পরিহিত বস্ত্রের নীচে একটি বোতল লুকিয়ে রেখেছিল। হযরত ওমর (রাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে যুবক! তুমি তোমার বস্ত্রের নিচে কি ঢেকে রেখেছ ?


বোতলটিতে মদ ভর্তি ছিল। তাই যুবকটি জবাব

দিতে ইতঃস্তত করছিল। সে তখন আত্ম অনুশোচনায় ও ভয়-ভীতিতে বিহবল অবস্থায় হৃদয়ের গহীন থেকে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করল,


‘হে মাবুদ ! আমাকে তুমি খলিফা ওমর (রাঃ) এর সামনে লজ্জিত করো না।’


তার কাছ থেকে ত্রুটি ও অপরাধ গোপন রাখ। আমি তোমার নিকট খাঁটি তাওবাহ করছি এবং এই

প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, জীবনে আর কোনদিনই

আমি মদ স্পর্শ করবো না। 


এরুপ তাওবাহ করার পর ক্ষণেই যুবক হযরত ওমর রা. এর প্রশ্নের জবাব দিল যে, হে খলিফা! আমার কাছে এটি একটি সিরকার বোতল। কিন্তু খলিফা তার কথায় পূর্ণ আস্থা না এনে বোতলটি দেখতে চাইলেন। 

তার ইচ্ছানুযায়ী তখন বোতলটি তার সামনে পেশ করা হল।


দেখা গেল যে, বোতলটির মধ্যে সত্যিই সিরকা ভর্তি রয়েছে। [৫]


এভাবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার ওপর গভীর আস্থা ও বিশ্বাস থেকে দুআ করায় আল্লাহ তায়ালা তাঁর দুআ তাৎক্ষণিকভাবে কবুল করে নেন। এজন্য আল্লাহর ওপর তাওয়াককুলের অনেক অনেক মূল্য। তাওয়াককুলবিহীন দুআ যথার্থ নয়। আমরা হৃদয়ের সুপ্ত কুঠুরি থেকে গহীন বিশ্বাস নিয়ে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার কাছে প্রার্থনা করবো, মিনতি জানাবো— আমাদের দুআ অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা কবুল করবেন। 


[৩] 


আমাদের চেয়ে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ভালো বুঝেন। তিনি জানেন —কখন কোথায় কিভাবে বান্দাকে রাখলে বান্দার জীবনের জন্য কল্যাণকর হবে। তিনি আমাদের চেয়ে উত্তম পরিকল্পনাকারী। এজন্য কিছু দুআ তিনি তাৎক্ষণিকভাবে কবুল করে নেন। কিছু দুআ একটু বিলম্বে কবুল করেন। এজন্য আমাদের পছন্দমাফিক প্রত্যাশিত সময়ে দুআ কবুল নাও হতে পারে। এতে বিচলিত হবার কিছু নেই। মনে রাখতে হবে— ভবিষ্যতের জ্ঞান আল্লাহ রাখেন —আমি নই।


কিছু বিপদ চাপিয়ে দিয়ে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বান্দার মান-মর্যাদা, শান-শওকত বৃদ্ধি করে দেন। এজন্য বিপদ এলেই ঘাবড়ে যাবেন না, বরং দুআ করুন। দুআ দ্রুত কবুল না হলেও ঘাবড়াবেন না, বরং দুআ করতেই থাকুন। অনবরত আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার কাছে মিনতি করতেই থাকুন। আপনার দুআ কবুল হয়েছে —নিশ্চিন্ত থাকুন। শুধু অপেক্ষা করুন। আগামীতে ভালো কিছু প্রহর গুনছে আপনার জন্য। যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। 


আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘অতঃপর নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে রয়েছে স্বস্তি। নিশ্চয়ই দুঃখের সাথে রয়েছে শান্তি।’ [৬] 


বর্তমানে যে বিপদে আপতিত আছেন —সেই বিপদের সুড়ঙ্গ বেয়েই ঐ সুখ, শান্তি ও স্বস্তির সন্ধান পেয়ে যাবেন আপনি —আল্লাহর পরিকল্পনা এমনই দূরদর্শী, নিখুঁত ও মহৎ হয়ে থাকে। 


আপনি ভেবে দেখুন— হজরত ইউসুফ (আঃ) যদি সেই গহীন কূপে নিক্ষিপ্ত না হতেন, তবে মুসাফিরদের পাত্রে উঠতেন না। যদি মুসাফিরদের পাত্রে না উঠতেন তবে সূদুর মিশরে যেতে পারতেন না। যদি সূদুর মিশরে যেতে না পারতেন তবে আজিজে মিশরের গোলাম হয় রাজপ্রাসাদ অবধিও পৌঁছতে পারতেন না এবং এক সময়ে মান-মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পালন করতে পারতেন না।


এ-ই যে ক্ষণিকের বিপদের ওপর নির্ভর করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা তাঁকে সুবিশাল একটি প্রক্রিয়া পারি দিয়ে মান ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার কর্মপরিকল্পনা এমনই সুন্দর ও নিপুণ হয়ে থাকে। এজন্য প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যে দুআ কবুল না হলে হতাশায় মুষড়ে পড়বেন না। আপনার জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আরও উন্নত কল্যাণকর কিছু লিখে রেখেছেন। 


আর কিছু দুআ আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন না— এটা এজন্য যে— হয়তো আপনি যা কামনা করছেন তাতে ক্ষতি রয়েছে, বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। আর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আপনাকে বিপদ থেকে বাঁচাতে চাচ্ছেন। অথবা আপনি যা প্রত্যাশা করছেন তার চেয়েও বড়ো কিছু, কল্যাণকর কিছু যা আপনার জন্য বেশি সুবিধাজনক এবং মঙ্গলজনক হবে— আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আপনাকে তা দিতে চাচ্ছেন।


এজন্য দুআ নিয়ে কোনো নিরাশা নয়। বিপদ নিয়ে কোনো হতাশা নয়। হতাশার কালমেঘ আপনার মস্তিষ্ক থেকে ঝেড়ে ফেলে দিন। পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে জীবনের সামনে অগ্রসর হউন। দুআ করুন এবং করতে থাকুন। আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস রাখুন। 


[৪] 


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা সবসময়ই দুআ কবুল করেন। তারপরও বিশেষ কিছু সময় রয়েছে— যে সময় তিনি একটু বেশি দুআ কবুল করে থাকেন। তন্মধ্য থেকে নিম্নে কিছু সময়ের বিবরণ তুলে ধরা হলো,


০১. শেষ রাত্রে এবং ফরজ সালাতের পর : হজরত আবু উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! কোন সময়ের দুআ বেশি গ্রহণযোগ্য হয়? তিনি বললেন, ‘শেষ রাতের দুআ এবং ফরজ সালাতের পরের দুআ।’ [৭]


হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশ বাকি থাকতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন। অতঃপর তিনি বলেন, আমার কাছে যে দুআ করবে তার দুআ আমি কবুল করব। যে ব্যক্তি আমার নিকট কিছু প্রার্থনা করবে আমি তাকে তা দান করব। যে ব্যক্তি আমার নিকট ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করে দেবো।’ [৮] 


০২. আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দুআ : আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দুআ কখনো প্রত্যাখ্যাত হয় না।’ [৯] 


০৩. জুমার দিনের দুআ : হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) জুমার দিন সম্পর্কে অলোচনা করেন এবং বলেন, ‘এ দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, কোনো মুমিন বান্দা যদি এ সময় সালাতে দাঁড়িয়ে আল্লাহ তায়ালার কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তবে তিনি তাকে তা অবশ্যই দিয়ে থাকেন এবং তিনি হাত দিয়ে ইঙ্গিত করে বুঝিয়ে দিলেন যে, সে মুহূর্তটি খুবই সংক্ষিপ্ত।’ [১০] 


অন্য বর্ণনায় আছে, সেই সময়টি হলো ‘আসর হতে মাগরিব পর্যন্তের সময়।’ [১১] 


এছাড়াও সিয়ামের দিনের দুআ, লাইলাতুল কদরের দুআ, সিজদার সময়ের দুআ, জিহাদের ময়দানের দুআ ইত্যাদি কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত সময়ে দুআ করলে আল্লাহ রব্বুল আলামীন দুআ কবুল করে নেন। 

আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদের সকলের দুআ সবসময় কবুল করে নিন। আমিন। 

.

রেফারেন্স.

––––––

[১] সূরাহ গাফির, আয়াত : ৬০।

[২] সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬৩৪০।

[৩] সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৬৮২৯।

[৪] সহীহ বুখারী, হাদীস : ৭৪০৫, সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৪৬৭৫।

[৫] মুকাশাফাতুল কুলুব, ইমাম গাজ্জালী (রহঃ)।

[৬] সূরাহ ইনশিরাহ, আয়াত : ৫-৬।

[৭] মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদীস : ৯৬৮।

[৮] সহীহ বুখারী, হাদীস : ১১৪৫। 

[৯] আবু দাউদ, হাদীস : ৫২১।

[১০] সহীহ বুখারী, হাদীস : ৯৩৫।

[১১] আবু দাউদ, হাদীস : ১০৪৮।


___________________________


|| দুআ কবুলের রহস্য ||

- আব্দুল্লাহ আল কাফী।

Previous Post Next Post